আকিদা

 আকিদা-


১. প্রশ্নঃ  আমাদের সৃষ্টিকর্তার নাম কি❓

উত্তরঃ আল্লাহ্‌।

২. প্রশ্নঃ আল্লাহর কতগুলো নাম রয়েছে❓

উত্তরঃ আল্লাহ তা’আলার নাম অসংখ্য-অগণিত।

৩. প্রশ্নঃ আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্‌ কোথায় আছেন❓

উত্তরঃ রহমান আরশ এর উপরে উঠেছেন । (সূরা ত্বহাঃ ৫

৪. প্রশ্নঃ আল্লাহর আরশ কোথায় আছে❓

উত্তরঃ সাত আসমানের উপর।

৫. প্রশ্নঃ আল্লাহ কি সর্বস্থানে বিরাজমান❓

উত্তরঃ না। আল্লাহ্‌ সবজায়গায় বিরাজমান নন। তিনি সপ্তকাশের উপর সুমহান আরশে উঠেছেন (সূরা ত্বাহাঃ ৫) 

৬. প্রশ্নঃ আল্লাহর কাজ কি❓

উত্তরঃ সৃষ্টি করা, রিযিক প্রদান, বৃষ্টি বর্ষণ, লালন-পালন করা, সাহায্য করা, জীবন-মৃত্যু প্রদান, পরিচালনা করা, সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করা, তত্বাবধান করা ইত্যাদি ইত্যাদি।

৭. প্রশ্নঃ তাওহীদ কাকে বলে❓

উত্তরঃ তাওহীদ অর্থ একত্ববাদ। পরিভাষায়ঃ ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে একক নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদ।

৮. প্রশ্নঃ তাওহীদ কত প্রকার?

উত্তরঃ তাওহীদ ৩ প্রকার।

৯. প্রশ্নঃ তিন প্রকার তাওহীদ কি কি?

উত্তরঃ (১) তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌ বা কর্ম ও পরিচালনার একত্ববাদ (২) তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌ বা দাসত্বের একত্ববাদ (৩) তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাত বা নাম ও গুণাবলীর একত্ববাদ।

১০. প্রশ্নঃ তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌ কাকে বলে❓

উত্তরঃ আল্লাহ্‌ তাঁর কর্ম সমূহে একক- তাঁর কোন শরীক নেই, একথা মেনে নেয়ার নাম তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌

১১. প্রশ্নঃ তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌ কাকে বলে❓

উত্তরঃ বান্দার ইবাদত-বন্দেগী ও দাসত্ব এককভাবে আল্লাহর জন্যে নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌।

১২. প্রশ্নঃ তাওহীদে আসমা ওয়াস্‌ সিফাত কাকে বলে?

উত্তরঃ কুরআন ও হাদীছে আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলী উল্লেখ রয়েছে, যা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও পরিপূর্ণতার প্রমাণ বহন করে, সেগুলোকে কোন প্রকার ধরণ-গঠন নির্ধারণ না করে বা অস্বীকার না করে সেভাবেই মেনে নেয়ার নাম তাওহীদে আসমা ওয়াস্‌ সিফাত।

১৩. প্রশ্নঃ তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌র উদাহরণ কি❓

উত্তরঃ সৃষ্টি করা, রিযিক দেয়া, বৃষ্টি দেয়া, লালন-পালন করা, সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করা, তত্বাবধান করা ইত্যাদি।

১৪. প্রশ্নঃ তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌র উদাহরণ কি❓

উত্তরঃ ঈমান, ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খা, ভালবাসা, দু’আ-প্রার্থনা, সাহায্য কামনা, উদ্ধার কামনা, রুকূ-সিজদা ইত্যাদি।

১৫. প্রশ্নঃ তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাতের উদাহরণ কি❓

উত্তরঃ الرحمن আর্‌ রাহমান, السميع আস্‌ সামী’ (শ্রবণকারী) البصير আল বাছীর (মহাদ্রষ্টা), العلو আল ঊলু (সুউচ্চ) ইত্যাদি।

১৬. প্রশ্নঃ আল্লাহর ৯৯টি নাম মুখস্থ- করার ফযীলত কি❓

উত্তরঃ মু্খস্থ- করে আমল করলে বিনিময় জান্নাত।

১৭. প্রশ্নঃ ‘মুমিনের কলব আল্লাহর আরশ’ এটা কার কথা?

উত্তরঃ এটা মানুষের বানানো কথা। আল্লাহ বা রাসূলের কথা নয়। (জাল হাদীছ)

১৮. প্রশ্নঃ আল্লাহ কি নিরাকার❓

উত্তরঃ না। কেননা তাঁর অসি-ত্ব ও সত্তা আছে। যার সত্তা ও অসি-ত্ব থাকে তাকে নিরাকার বলা যায় না।

২০. প্রশ্নঃ আল্লাহ যদি নিরাকার না হন, তবে তাঁকে কি দেখা সম্ভব❓

উত্তরঃ হ্যাঁ, তাঁকে দেখা সম্ভব। তবে এ দুনিয়ায় চর্ম চোখে সম্ভব নয়। আখেরাতে জান্নাতীগণ আল্লাহকে দেখবেন। (সূরা ক্বিয়ামাহ্‌ঃ ২২-২৩, বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ)

২১. প্রশ্নঃ ঈমান কাকে বলে❓

উত্তরঃ ঈমান মানে বিশ্বাস। পরিভাষায়ঃ অন-রে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার ও কর্মে বাস্ত-বায়নকে ঈমান বলে।

২২. প্রশ্নঃ ঈমান কি কমে ও বাড়ে❓

উত্তরঃ হ্যাঁ, ঈমান কমে ও বাড়ে।

২৩. প্রশ্নঃ কিভাবে ঈমান কমে বাড়ে❓

উত্তরঃ সৎকাজের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে, আর অসৎ কাজ করলে ঈমান কমে।

২৪. প্রশ্নঃ ঈমানের শাখা কতটি❓

উত্তরঃ সত্তরের অধিক।

২৫. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বোচ্চ স্তর কি❓

উত্তরঃ কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ পাঠ করা।

২৬. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বনিম্ন শাখা কি❓

উত্তরঃ রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা।

২৭. প্রশ্নঃ ঈমানের স্তম্ভ কয়টি❓ কি কি❓

উত্তরঃ ঈমানের স্তম্ভ ৬টি। সেগুলো হচ্ছেঃ (১) আল্লাহ (২) ফেরেশতাকুল (৩) আসমানী কিতাব (৪) নবী-রাসূল (৫) শেষ দিবস ও (৬) তক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান

২৮. প্রশ্নঃ ইসলাম কাকে বলে❓

উত্তরঃ ইসলাম অর্থ, আত্মসমর্পন। পরিভাষায়ঃ তাওহীদ ও আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন করা এবং শির্ক ও মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা।

২৯. প্রশ্নঃ ইসলামের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি❓

উত্তরঃ ইসলামের স্তম্ভ ৫টি। সেগুলো হচ্ছেঃ (১) কালেমায়ে শাহাদাত উচ্চারণ করা, (২) নামায প্রতিষ্ঠা করা, (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) রামাযান মাসে রোযা রাখা (৫) সামর্থ থাকলে আল্লাহর ঘরের হজ্জ আদায় করা।

৩০. প্রশ্নঃ আল্লাহর ফেরেশতাগণ কিসের তৈরী❓

উত্তরঃ তাঁরা নূরের তৈরী❓

৩১. প্রশ্নঃ ফেরেশতাদের সংখ্যা কত❓

উত্তরঃ তাঁদের সংখ্যা কত তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।

৩২. প্রশ্নঃ প্রধান চার ফেরেশতার নাম কি❓

উত্তরঃ জিবরাঈল, ইসরাফীল, মীকাঈল ও মালাকুল মওত (আঃ)।

৩৩. প্রশ্নঃ ওহী নাযিল করার দায়িত্ব কোন ফেরেশতার ছিল❓

উত্তরঃ জিবরাঈল (আঃ) এর।

৩৪. প্রশ্নঃ কোন ফেরেশতাকে সকল ফেরেশতার সরদার বলা হয়❓

উত্তরঃ জিবরাঈল (আঃ) কে।

৩৫. প্রশ্নঃ ইসরাফীল (আঃ) এর দায়িত্ব কি❓

উত্তরঃ আল্লাহর নির্দেশ ক্রমে শিংগায় ফুৎকার দেয়া।

৩৬. প্রশ্নঃ মীকাঈল ফেরেশতার কাজ কি❓

উত্তরঃ তিনি বৃষ্টি বর্ষণ, উদ্ভিদ উৎপাদন প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত।

৩৭. প্রশ্নঃ প্রাণীকুলের জান কবজের কাজে নিয়োজিত ফেরেশতার নাম কি❓

উত্তরঃ মালাকুল মওত। (আজরাঈল নাম বিশুদ্ধ নয়)

৩৮. প্রশ্নঃ কোন ফেরেশতা কি মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ করতে পারে❓

উত্তরঃ না, আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ কারো কোন কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক নয়- ফেরেশতা, জিন, মানুষ- নবী, ওলী কেউ না।

৩৯. প্রশ্নঃ প্রসিদ্ধ আসমানী কিতাব কতখানা❓

উত্তরঃ ৪ খানা। ১. তাওরাত , ২. যাবূর , ৩. ইঞ্জিল , ৪. কুরআন ।

৪০. প্রশ্নঃ কোন কিতাব কোন্‌ নবীর উপর নাযিল হয়েছে❓

উত্তরঃ কুরআন – মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর উপর, তাওরাত- মূসা (আঃ)এর উপর, ইঞ্জিল- ঈসা (আঃ) এর উপর এবং যাবূর- দাউদ (আঃ)এর উপর।

৪১. প্রশ্নঃ সর্বশেষ আসমানী কিতাবের নাম কি❓

উত্তরঃ কুরআনুল কারীম।

৪২. প্রশ্নঃ কালেমা “লাইলাহা ইল্লাল্লাহু’ এর অর্থ কি❓

উত্তরঃ আল্লাহ্‌ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই।

৪৩. প্রশ্নঃ আল্লাহ্‌ আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন❓

উত্তরঃ শুধু তাঁর ইবাদত করার জন্য। (সূরা যারিয়াত- ৫৬)

৪৪. প্রশ্নঃ মানুষ মৃত্যু বরণ করলে, কবরে তাকে তিনটি প্রশ্ন করা হবে। সেগুলো কি কি❓

উত্তরঃ প্রশ্ন করা হবে- তোমার রব কে❓ তোমার নবী কে❓ তোমার দ্বীন কি❓

৪৫. প্রশ্নঃ ইবাদত কাকে বলে❓

উত্তরঃ আল্লাহ পছন্দ করেন এমন প্রত্যেক গোপন ও প্রকাশ্য কথা ও কাজকে ইবাদত বলা হয়।

৪৬. প্রশ্নঃ ইবাদত কবূল হওয়ার শর্ত কয়টি ও কি কি❓

উত্তরঃ ইবাদত কবূল হওয়ার শর্ত দু’টিঃ (১) ইবাদত একনিষ্টভাবে আল্লাহর জন্য করা (২) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত মোতাবেক করা।

৪৭. প্রশ্নঃ সঠিক ইবাদতের মূল ভিত্তি কয়টি ও কি কি❓

উত্তরঃ যে কোন ইবাদত সঠিক হওয়ার জন্য তিনটি মূল ভিত্তি রয়েছে। (১) আল্লাহর প্রতি ভালবাসা, (২) তাঁকে ভয় করা ও (৩) তাঁর কাছে আশা-আকাংখা করা

৪৮. প্রশ্নঃ শিরক কাকে বলে?

উত্তরঃ ইবাদতের কোন একটি বিষয় আল্লাহ ছাড়া অন্যের উদ্দেশ্যে সম্পাদন করা।

৪৯. প্রশ্নঃ শির্ক কত প্রকার ও কি কি❓

উত্তরঃ শির্ক দু’প্রকারঃ বড় শির্ক ও ছোট শির্ক।

৫০. প্রশ্নঃ বড় শির্ক কাকে বলে❓

উত্তরঃ আল্লাহর ইবাদতে অন্য কাউকে অংশী করাকে বড় শির্ক বলে।

৫১. প্রশ্নঃ বড় শির্কের উদাহরণ কি❓

উত্তরঃ এর অনেক উদাহরণ রয়েছেঃ যেমনঃ আল্লাহ ছাড়া কাউকে সিজদা করা, আল্লাহ ছাড়া অন্যকে ডাকা, সাহায্য প্রার্থনা, সন-ান কামনা করা, বিপদাপদে উদ্ধার কামনা করা, গাইরুল্লাহর উদ্দশ্যে কুরবানী করা, কবর-মাজারে নযর-মান্নত করা ইত্যাদি।

৫২. প্রশ্নঃ বড় শির্কের পরিণাম কি❓

উত্তরঃ ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে এবং তওবা না করে মৃত্যু বরণ করলে, চিরকাল জাহান্নামের অধিবাসী হবে। (সূরা মায়েদাঃ ৭২)

৫৩. প্রশ্নঃ কোন্‌ পাপ নিয়ে তওবা ছাড়া মৃত্যু বরণ করলে চিরকাল জাহান্নামে থাকতে হবে?

উত্তরঃ শির্ক।

৫৪. প্রশ্নঃ নবী-ওলীকে উসীলা করে দু’আ করার বিধান কি❓

উত্তরঃ নবী, ওলী, ফেরেশতা বা যে কোন মানুষকে উসীলা করে দু’আ করা বড় শির্ক।

৫৫. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণ কি মোটেও আল্লাহকে বিশ্বাস করত না❓

উত্তরঃ তারা তাওহীদে রুবুবিয়্যার প্রতি বিশ্বাস রাখত।

৫৬. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণ তাওহীদে রুবুবিয়্যার প্রতি বিশ্বাস রাখত, একথার প্রমাণ কি❓

উত্তরঃ আল্লাহ্‌ বলেন, “তাদের যদি জিজ্ঞেস কর যে, কে আসমান যমীন সৃষ্টি করেছে, তবে তারা জবাবে অবশ্যই বলবে, আল্লাহ্‌।” (সূরা লোকমান- ৩১)

৫৭. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণ কি কোনই ইবাদত করত না❓

উত্তরঃ তারা বিভিন্নভাবে আল্লাহর ইবাদত করত। যেমন, তারা কা’বা ঘরের তওয়াফ করত। হজ্জ পালন করত ইত্যাদি।

৫৮. প্রশ্নঃ মক্কার কাফেরগণকে মুশরিক বলার কারণ কি❓

উত্তরঃ কেননা তারা মুর্তি পুজা করত।

৫৯. প্রশ্নঃ তাদের মুর্তি পুজার ধরণ কিরূপ ছিল❓

উত্তরঃ তারা মুর্তিগুলোকে আল্লাহর কাছে পৌঁছার মাধ্যম বা উসীলা মনে করত।

৬০. প্রশ্নঃ বিপদ-মুসীবতে পড়লে কাফেরদের অবস্থা কেমন হত❓

উত্তরঃ বিপদ-মুসীবতে পড়লে তারা শির্ক করত না। তখন তারা একনিষ্টভাবে আল্লাহকে ডাকত।

৬১. প্রশ্নঃ বর্তমান যুগে অনেক লোক বিপদ-মুসীবতে পড়লে কী করে থাকে❓

উত্তরঃ এ অবস্থায় অনেক মানুষ শির্কে লিপ্ত হয়। মাজারে দরবারে ধর্ণা দেয়। পীরের দরগায় নযর-মান্নত করে থাকে। তাবীজ-কবচ ব্যবহার কও ইেত্যাদি।

৬২. প্রশ্নঃ নবী-রাসূলগণের দা’ওয়াতের মূল বক্তব্য কী ছিল❓

উত্তরঃ “হে আমার সমপ্রদায়ের লোকেরা, তোমরা আল্লাহ্‌র ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের সত্য কোন মা’বূদ নেই।” (সূরা আ’রাফঃ ৫৯)

৬৩. প্রশ্নঃ ছোট শির্ক কাকে বলে❓

উত্তরঃ যে সমস- কাজকে শরীয়তে শির্ক নামে আখ্যা দেয়া হয়েছে, কিন’ উহা বড় শির্কের পর্যায়ভুক্ত নয়।

৬৪. প্রশ্নঃ ছোট শির্কের উদাহরণ কি❓

উত্তরঃ মানুষকে দেখানো কিংবা প্রশংসা কুড়ানো কিংবা দুনিয়া অর্জনের উদ্দেশ্যে ইবাদত করা, তাবিজ-কবচ ব্যবহার করা, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করা, গণক-জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া ইত্যাদি।

৬৫. প্রশ্নঃ তাবিজ-কবচ ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের হুকুম কি❓

উত্তরঃ এ কাজ ছোট শির্কের অন-র্ভূক্ত। তবে এটাকেই ত্রাণকর্তা ও আরোগ্য দাতা বিশ্বাস করলে বড় শির্ক।

৬৬. প্রশ্নঃ ছোট শির্কে লিপ্ত হলে তার পরিণতি কি❓

উত্তরঃ সে ইসলাম থেকে বের হবে না। তবে তার এই কাজ কাবীরা গুনাহের চাইতে বড় গুনাহ।

৬৭. প্রশ্নঃ পিতা-মাতা, সন্তান, মসজিদ, কা’বা প্রভৃতির নামে শপথ করার হুকুম কি❓

উত্তরঃ এরূপ শপথ বা কসম করা ছোট শির্কের অন-র্ভূক্ত।

৬৮. প্রশ্নঃ আব্দুর রাসূল (রাসূলের বান্দা), আবদুন্‌ নবী, গোলাম মোস্তফা, আব্দুল মুত্তালেব (মুত্তালেবের বান্দা) প্রভৃতি নাম রাখা কি❓

উত্তরঃ এরূপ নাম রাখা ছোট শির্কের অন-র্ভূক্ত।

৬৯. প্রশ্নঃ ইবাদতে ‘রিয়া’ বলতে কী বুঝায়❓

উত্তরঃ মানুষকে দেখানো বা তাদের প্রশংসা ও ভালবাসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে কোন ইবাদত সম্পাদন করা।

৭০. প্রশ্নঃ গণক বা জ্যোতীষীদের কাছে যাওয়ার ক্ষতি কি❓

উত্তরঃ তাদের কাছে গিয়ে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলে ৪০দিনের নামায কবূল হবে না। (মুসলিম)

৭১. প্রশ্নঃ গণক বা জ্যোতীষীদের কথা বিশ্বাস করার পরিণাম কি❓

উত্তরঃ তাদের কথা বিশ্বাস করলে নবী (সাঃ)এর নিকট প্রেরীত কুরআনের সাথে কুফরী করা হবে। (মুসলিম)

৭২. প্রশ্নঃ কোন মানুষ ভুলবশতঃ কুফরী কাজ করে ফেললে বা কথা বলে ফেললে তার কি হবে❓

উত্তরঃ তার কোন গুনাহ হবে না। তবে তার ভুল শুধরে দিতে হবে।

৭৩. প্রশ্নঃ অসুখ-বিসুখ হলে ঝাড়-ফুঁক করার হুকুম কি❓

উত্তরঃ কুরআনের আয়াত ও হাদীছের দু’আ পড়ে ঝাড়-ফুঁক করা জায়েয।

৭৪. প্রশ্নঃ কুরআনের আয়াত লিখে তাবিজ ব্যবহারের হুকুম কি❓

উত্তরঃ নাজায়েয। কেননা এটা জায়েয হওয়ার পক্ষে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) বা সাহাবা-তাবেঈনের কারো থেকে কোন দলীল নেই। তাছাড়া কুরআনকে এভাবে ব্যবহার করলে, কুরআনের অবমাননা হয়।

৭৫. প্রশ্নঃ বিদআত কাকে বলে❓

উত্তরঃ ছোয়াবের নিয়ত করে যে ইবাদত করা হয়; অথচ তার পক্ষে শরীয়তে দলীল পাওয়া যায় না, তাকেই বিদআত বলে।

৭৬. প্রশ্নঃ বর্তমানে প্রচলিত কিছু বিদআতের উদাহরণ কি❓

উত্তরঃ নামাযে মুখে নিয়ত পাঠ, মীলাদুন্নবী উদযাপন, দলবদ্ধভাবে যিকির, কুলখানি, চল্লিশা, খতমে জালালী, খতমে ইউনুস, ফাতেহাখানি, জন্মবার্ষীকি, মৃত্যুবার্ষীকি ইত্যাদি।

৭৭. প্রশ্নঃ বিদআত দু’প্রকারঃ ভাল বিদআত ও মন্দ বিদআত। এ সম্পর্কে আপনার মত কি❓

উত্তরঃ এরূপ ভাগ করার কোন দলীল নেই। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা।” (মুসলিম)

৭৮. প্রশ্নঃ সাইকেল, বাস, ট্রেন, প্লেনে চড়া, বিদ্যুৎ, মাইক ব্যবহার ইত্যাদি কি বিদআত নয়?্❓

উত্তরঃ না, কেননা একাজগুলো ইবাদত মনে করে ছোয়াবের উদ্দেশ্যে করা হয় না। এগুলো দুনিয়াবী কাজ।

৭৯. প্রশ্নঃ জিন জাতি কিসের তৈরী ❓

উত্তরঃ আগুনের তৈরী।

৮০. প্রশ্নঃ জিনদেরকে আল্লাহ্‌ কেন তৈরী করেছেন❓

উত্তরঃ তাঁর ইবাদত করার জন্য। (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬)

৮১. প্রশ্নঃ জ্বীনেরা কি মানুষের ভাল-মন্দ করতে পারে❓

উত্তরঃ না, আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ কারো ভাল-মন্দ করতে পারে না।

৮২. প্রশ্নঃ জ্বীনদের নিকট থেকে সাহায্য নেয়া জায়েয আছে কি❓

উত্তরঃ না, তাদের থেকে কোন সাহায্য নেয়া জায়েয নেই।

৮৩. প্রশ্নঃ জ্বীন তাবে করার হুকুম কি❓

উত্তরঃ জিন তাবে করা জায়েয নেই।

৮৪. প্রশ্নঃ সর্বপ্রথম আল্লাহ্‌ তা’আলা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) এর  নূর সৃষ্টি করেন, একথাটি কি ঠিক❓

উত্তরঃ না, কেননা এ সম্পর্কে সহীহ্‌ কোন হাদীছ নেই। জাল (বানোয়াট) হাদীছের ভিত্তিতে অনেকে একথাটি বলে থাকে।

৮৫. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি নূর থেকে সৃষ্টি❓

উত্তরঃ না, আদম সন্তান যে উপাদানে সৃষ্টি, তিনিও সেই উপাদানে সৃষ্টি। (সূরা কাহাফঃ ১১০)

৮৬. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি গায়েব জানতেন?

উত্তরঃ না, তিনি কোন গায়েব জানতেন না। (সূরা আনআমঃ ৫০)

৮৭. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি জীবিত?

উত্তরঃ না, তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন। (সূরা যুমারঃ৩০)

৮৮ প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি হাযের-নাযের (অর্থাৎ সবখানে তিনি উপসি’ত হতে পারেন, এরূপ বিশ্বাস করা কি)❓

উত্তরঃ না, তিনি হাযের-নাযের নন। এরূপ বিশ্বাস করা কুফরী।

৮৯. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) কি কারো উপকার-অপকারের ক্ষমতা রাখেন?

উত্তরঃ না। (সূরা জিনঃ ২১)

৯০. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্ম দিবস উপলক্ষে ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপন করার হুকুম কি❓

উত্তরঃ নাজায়েয, বিদআত।

৯১. প্রশ্নঃ কোন মুসলমানকে কাফের বলার পরিণতি কি❓

উত্তরঃ ঐ ব্যক্তি কাফের না হলে, কথাটি যে বলেছে তার উপর পতিত হবে।

৯২. প্রশ্নঃ ফাসেক ব্যক্তির ইমামতিতে নামায পড়া জায়েয কি❓

উত্তরঃ ফাসেককে ইমাম নিযুক্ত করা জায়েয নয়; তবে সে ইমাম হয়ে গেলে তার পিছনে নামায পড়া জায়েয।

৯৩. প্রশ্নঃ মুসলামনদের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোন কাফেরকে হত্যা করার হুকুম কি❓

উত্তরঃ হারাম। এরকম কাফেরকে যে ব্যক্তি হত্যা করবে, সে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাবে না।

৯৪. প্রশ্নঃ কাফেরকে কেউ যদি কাফের না বলে, তাতে কোন ক্ষতি আছে কি❓

উত্তরঃ তাদেরকে যে ব্যক্তি কাফের বিশ্বাস করবে না বা তাদেরকে কাফের বলতে দ্বিধা করবে, সে কাফের হয়ে যাবে।

৯৫. প্রশ্নঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত কারা?

উত্তরঃ যারা আকীদা ও আমলের ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরে থাকে এবং তার উপর ঐক্যবদ্ধ থাকে। আর সাহাবায়ে কেরাম তথা সালাফে সালেহীনের রীতি-নীতিকে অনুসরণ করে।

৯৬. প্রশ্নঃ ইসলাম বা তার কোন বিষয় নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করলে, পরিণতি কি❓

উত্তরঃ যে এরূপ করবে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে।

৯৭. প্রশ্নঃ বৈধ অসীলা কত প্রকার ও কি কি❓

উত্তরঃ তিন প্রকারঃ (১) আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর অসীলা (২) নেক আমলের অসীলা (৩) সৎ ব্যক্তির দু’আর অসীলা।

৯৮. প্রশ্নঃ অবৈধ অসীলার উদাহরণ কি❓

উত্তরঃ যেমনঃ নবী-রাসূল, ফেরেশতা, ওলী-আউলিয়া ইত্যাদির অসীলা করা। মৃত ব্যক্তির কাছে দু’আ চাওয়াও নিষিদ্ধ অসীলার অন-র্ভূক্ত।

৯৯. প্রশ্নঃ কবরে বা মাজারে বা কোন পীরের উদ্দেশ্যে মানত করার হুকুম কি❓

উত্তরঃ শির্ক।©️



আসুন ছোট ছোট শিরক সম্পর্কে জানি ও এগুলো থেকে বিরত থাকি।✔️


🔘আল্লাহ্ ব্যতিত অন্য কারো নামে কসম করা শিরক।

🔘কোন কিছুকে শুভ-অশুভ লক্ষন বা কুলiক্ষণ মনে করা শিরক।

🔘মাজারে ও কোন পির-ফকির কিংবা কারো নিকট সিজদা দেয়া শিরক।

🔘আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো বা যেকোন পির আওলিয়া কিংবা মাজারের নামে মানত করা শিরক।

🔘কেউ পেছন দিক থেকে ডাক দিলে কিংবা নিজে যাত্রার সময় পিছন ফিরে তাকালে যাত্রা অশুভ হয় এই ধারনা বিশ্বাস করা শিরক।

🔘কোন বিপদে পড়ে আল্লাহকে বাদ দিয়ে "ও মা, ও বাবা" ইত্যাদি বলে এইরকম গায়েবি ডাকা শিরক।

বিপদে পড়লে "ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন" বলতে হয়।

🔘তোর ভবিষ্যত অন্ধকার', 'তর কপালে বহুত কষ্ট আছে',এই ধরনের গায়েবি কথা কাউকে বলা শিরক।

🔘হোচট খেলে কিংবা পেচা ডাকলে সামনে বিপদ আছে এই ধারনা শিরক

🔘রোগ ব্যাধি বা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে শরীরে পিতলের বালা, শামুক, ঝিনুকের মালা, সুতা, কিংবা যেকোন প্রকারের বস্তু লটকানো শিরক।

🔘সকালে বেচাকেনা না করে কোন কাষ্টমারকে বাকি দিলে কিংবা সন্ধ্যার সময় কাউকে বাকি দিলে ব্যাবসায় অমঙ্গল হয় এই ধারনা করা শিরক!।

🔘সফলতা কিংবা মঙ্গল লাভের জন্য এবং অমঙ্গল থেকে রক্ষা পেতে যেকোন প্রকার আংটি ব্যবহার করা শিরক।

🔘যে কোন জড় বস্তুকে সম্মান দেখানো তথা তাযীম করা বা তার সামনে নিরবতা পালন করা শিরক

যেমন: স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার কিংবা মাজার ইত্যাদি।

🔘আল্লাহর ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কিংবা লোক দেখানো ইবাদাত করা শিরক।

🔘আল্লাহ্ ব্যাতিত কোন গণক বা অন্য কেউ গায়েব জানে এই কথা বিশ্বাস করা শিরক

🔘পায়রা/ কবুতর উড়িয়ে শান্তি কামনা করা শিরক,

কারণ শান্তিদাতা একমাত্র আল্লাহ্

🔘আল্লাহর ছাড়া কোন পির-আওলিয়া এবং কোন মাজারের নিকট দুয়া করা বা কোন কিছু চাওয়া শিরক।

🔘শরিরে যে কোন প্রকার তাবিজ ঝুলানো শিরক।

🔘গণকের কাছে গেলে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলে 40 দিনের সালাত বাতিল আর বিশ্বাস করলে সে কাফের। 

🔘যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে সালাত,সিয়াম ও দান করল সে শিরক করল

🔘কুরআন কি আল্লাহর সৃষ্টি? নাকি আল্লাহর বানী? আল্লাহর বানি, সৃষ্টি বিশ্বাস করলে সে কাফের

🔘আল্লাহ ও আপনার দোয়ায় ভালো আছি।

🔘যে ব্যক্তি তা‘বীয ব্যবহার করবে আল্লাহ তাকে পূর্ণতা দিবেন না। আর যে কড়ি ব্যবহার করবে আল্লাহ তাকে মঙ্গল দান করবেন না

🔘যে ব্যক্তি তা‘বীয ব্যবহার করল সে শির্ক করল

🔘যে হাতের রাশি দেখে ভাগ্যের ভবিষ্যৎ প্রকাশ করা, হাত চালিয়ে হারিয়ে যাওয়া বস্তুর সংবাদ দেয়া, টিয়া পাখির মাধ্যমে ভাগ্যের ভবিষ্যৎ প্রকাশ করা গণকের নিকট হারিয়ে যাওয়া বস্তু জানতে চাওয়া এগুলো সবই শিরক।

🔘কোনো ব্যাক্তি বা বস্তুর সম্মানের জন্য দারানো। কারন এটা শিরক।



 বড় শিরক-


এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা 


‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না। তা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা ৪ : ৪৮]


‘কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৭২]


দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারী বানানো


‘তারা আল্লাহকে ব্যতীত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। বল, তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি জানেন না? তিনি মহান, পবিত্র এবং তারা যাকে শরিক করে তা হতে তিনি ঊর্ধ্বে।’ [সুরা ইউনুস, ১০ : ১৮]


‘জেনে রাখ, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরুপে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা তো এদের পূজা এজন্যই করি যে, ইহারা আমাদের আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে।’ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফয়সালা করে দিবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা যুমার, ৩৯ : ৩]


তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা


এমন কাফির, যার কুফরির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ একমত। সেটা আসলি কাফির হতে পারে—যেমন ইহুদি, খৃস্টান ও হিন্দু সম্প্রদায়—আবার মুরতাদ, যিনদিকও হতে পারে, যেমন প্রকাশ্যে আল্লাহ, রাসুল বা দীনের কোনো অকাট্য ব্যাপার নিয়ে কটূক্তিকারী; যাদের কুফরির ব্যাপারে হকপন্থি আলিমগণ একমত।


চার. নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা


‘আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা দাবি করে যে, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে, আমরা তার ওপর ঈমান এনেছি। তারা বিচার-ফয়সালা নিয়ে যেতে চায় তাগুতের কাছে, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে তারা তাকে মান্য না করে। পক্ষান্তরে শয়তান তাদের প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬০]


পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা


‘অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক বলে মনে না করে। এরপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোনো রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬৫]


ছয়. দীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা


“তুমি তাদের প্রশ্ন করলে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ‘আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’ বলো, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রাসুলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ তোমরা অযুহাত দেয়ার চেষ্টা করো না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরি করেছ।” [সুরা তাওবা, ৯ : ৬৫-৬৬]


সাত. জাদু করা


‘সুলাইমান কুফরি করেনি, কুফরি তো করেছিল শয়তানরাই। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত…।’ [সুরা বাকারা, ২ : ১০২]


আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা


‘হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভাইও যদি ঈমানের বিপরীতে কুফরিকে বেছে নেয়, তবে তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।’ [সুরা তাওবা, ৯ : ২৩]


‘হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খৃস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৫১]


নয়. কাউকে দীন-শরিয়তের ঊর্ধ্বে মনে করা


‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৩]


দশ: দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া


‘যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলি দ্বারা উপদিষ্ট হয়েও তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক অপরাধী আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।’ [সুরা সাজদা, ৩২ : ২২]



১.ইবাদত পাওয়ার একমাত্র উপযুক্ত সত্তা আল্লাহ তা‘আলাকে না মেনে তাঁর সাথে আরো কাউকে যোগ্য বলে মনে করা

২.মৃতব্যক্তির নিকট কিছু চাওয়া বা অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য দো‘আ করা শিরকে আকবার তথা বড় শিরক

৩.মৃতব্যক্তির নিকট সাহায্য চাওয়া বা কাউকে বান্দা নেওয়াজ, গরীবে নেওয়াজ, গাওছুল আযম (সর্বোচ্চ সহযোগিতাকারী) মনে করাও বড় গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, যা মানুষকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়

৪.আল্লাহ ব্যতীত মৃত বা জীবিত কারো নামে মানত করা শিরক।

৫.যে স্থানে মুশরিকরা তাদের দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে পশু যবেহ করে সে স্থানটি শিরকের নিদর্শনে পরিণত হয়




কুফরি বাক্য: 


১) আপত্তি করে বলা: এ ব্যক্তি লোকদের সাথে যা কিছুই করুক, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য পূর্ণ (full) স্বাধীনতা রয়েছে। 

২) এইভাবে আপত্তি করে বলা: কখনো আমরা অমুকের সাথে সামান্য কিছু করলে আল্লাহ তৎক্ষনাৎ আমাদের পাকড়াও করে ফেলেন।

৩)আল্লাহ সর্বদা আমার শক্রদের সহায়তা করেছেন।

৪)সর্বদা সবকিছু আল্লাহর সমীপে সমর্পণ করেও দেখেছি, কিছুই হয়না।

৫)আল্লাহ তাআলা আমার ভাগ্যকে এখনো পর্যন্ত সামান্য ভাল করলেন না। 

৬)হয়তো তাঁর ভান্ডারে আমার জন্য কিছুই নেই। আমার পার্থিৰ আশা-আকাঙ্খা কখনো পূর্ণ হলো না। জীবনে আমার কোন দোআ কবুল হলো না। যাকে চেয়েছি সে দূরে চলে গেলো ।আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো । সব ইচ্ছাই অপূর্ণ রয়ে গেলো ।এখন আপনিই বলুন, আমি আল্লাহর উপর কীভাবে ঈমান আনব? 


৭)এক ব্যক্তি আমাদেরকে অত্যাচারে অতিষ্ট করে রেখেছে। মজার কথা হচ্ছে, আল্লাহও এমন লোকদের সহায়তা করে থাকেন।


৮) যে ব্যক্তি বিপদে পড়ে বলে: হে আল্লাহ! তুমি সম্পদ কেড়ে নিয়েছ। অমুক জিনিস কেড়ে নিয়েছ। এখন কি করবে? অথবা, এখন কিকরতে চাও? কিংবা, এখন কি করার বাকী রয়েছে?- তার এ কথা কুফরি


৯) যে বলে: আল্লাহ তাআলা আমার অসুস্থতা ও ছেলের কষ্ট সত্তেও যদি আমাকে শাস্তি দিয়ে থাকেন, তবে তিনি আমার উপর জুলুম করলেন ।- এটা বলা কুফরী। 

১০) আল্লাহ তাআলা সর্বদা দুষ্ট লোকদের সহায়তা করেছেন।

১১)আল্লাহ তাআলা অসহায়দের আরও পেরেশান করেছেন।

১২) যে বলে: হে আল্লাহ! আমাকে রিযিক দাও আর আমার উপর অভাব অনটন চাপিয়ে দিয়ে অত্যাচার করো না।এমন বলা কুফরী 

১৩)অনেক লোক কর্জ ও ধন সম্পদ অর্জনের জন্য, অভাব- অনটন, কাফিরদের সান্নিধ্যে চাকুরীর জন্য ভিসা-ফরমে, অথবা কোন ভাবে টাকা ইত্যাদি মওকুফের জন্য দরখাস্তে যদি নিজেকে খ্রীষ্টান, ইহুদী, কাদিয়ানী কিংবা যে কোন ধরণের কাফির ও মুরতাদ সম্প্রদায়ের পরিচয় দেয় অথবা লিখানো হয় তার উপর কুফুরীর বিধান বর্তাবে।


১৪)কারো নিকট আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন কালে বলা বা লিখা: আপনি ? যদি কাজ করে না দেন, তবে আমি কাদিয়ানী বা খ্রীষ্টান হয়ে যাব।এমন উক্তিকারী তৎক্ষনাৎ কাফির হয়ে গেছে। এমনকি কেউ যদি বলে।যে, আমি ১০০ বছর পর কাফির হয়ে যাব।- সে এখন থেকেই কাফির হয়ে গেছে। 


১৫)“কেউ পরামর্শ দিল: তুমি কাফির হয়ে  যাও। এমতাবস্থায়, সে কাফির হোক বা না হোক, পরামর্শদাতার উপর কুফরির বিধান বর্তাবে। এমনকি কেউ কুফুরী বাক্য উচ্চারণ করল, এর প্রতি সন্তুষ্ট  ব্যক্তির উপরও কুফুরীর বিধান বর্তাবে। কেননা কুফরিকে পছন্দ করাও কুফরি। 


১৬)বাস্তবিক পক্ষে যদি আল্লাহ ?থাকত, তবে অভাবগ্রস্তদের সাহায্য করত, খণপ্রস্তদের সহায় হত।


১৭)আমি জানি না আল্লাহ তাআলা যখন আমাকে দুনিয়াত কিছু দিলেন না, ত তবে আমাকে সৃষ্টিই বা কেন করলেন?- এ উক্তিটি কুফরী ।

১৮)কোন অভাবগ্রস্ত লোক নিজের অভাব-অনটন দেখে বলল: হে আল্লাহ! অমুকও তোমার বান্দা, তুমি তাকে কত নিয়ামতই দিয়ে রেখেছ এবং আমিও তোমার আরেক বান্দা, আমাকে কত দুঃখ-কষ্ট দিচ্ছ। এটা কি ন্যায় বিচার?


১৯)কথিত আছে: আল্লাহ তাআলা ধৈর্য্যশীলদেরসাথে আছেন, আমি বলছি এসব প্রলাপ মাত্র।

২০)যেসব লোককে আমি ভালবাসি তারা পেরেশানীতে থাকে, আর যারা আমার শত্রু,আল্লাহ তাআলা তাদেরকে খুবই স্বাচ্ছন্দ্য রাখেন


২১)কাফির ও অম্পদশালীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য আর গরীবও অভাবগ্রস্তদের জন্য দুরদশা।আল্লাহর ঘরের তো সমস্ত রীতিই উল্টো


২২)যদি কেউ অসুস্থতা, রোজগারহীনতা, অভাব-অনটন অথবা কোন বিপদ আপদের কারণে আল্লাহ তাআলার বিরুদ্ধে আপত্তি করে বলে: হে আমার রব! তুমি কেন আমার উপর অত্যাচার করছ? অথচ আমি তো কোন গুনাহ করিনি- তবে সে ব্যক্তি  কাফির।


২৩)কারো মৃত্যু হল, একে কেন্দ্র করে অন্যজন বলল: |আল্লাহ তাআলার এমনটি করা উচিত হয়নি। 

২৪)কারো পুত্রের মৃত্যুহল, সে বলল: আল্লাহ তাআলার কাছে এর প্রয়োজন ছিল।- এই উক্তিটি কুফরী । কারণ উক্তিকারী আল্লাহ তাআলাকে মুখাপেক্ষী সাব্যস্ত |করেছে।


২৫) কারো মৃত্যুতে সাধারণত বলে থাকে: না জানি আল্লাহ তাআলার কাছে তার ?কী প্রয়োজন হয়ে গেল যে, এত তাড়াতাড়ি আহবান করলেন? অথবা ? বলে থাকে: আল্লাহ তাআলার নিকটও নেক্কার লোকদের প্রয়োজন হয়, একারণে শীঘ্রই উঠিয়ে নেন। (এমন উক্তি শুনে মর্ম বুঝা সত্তে | সাধারণত লোকেরা হ্যা-র সাথে হ্যা! মিলিয়ে থাকে, অথবা এর সমর্থনে মাথা নেড়ে থাকে  এদের সবার উপর কুফরের বিধান আরোপিত হবে। 

২৬)কারো মৃত্যুতে বলল: হে আল্লাহ! তার ছোট ছোট সন্তানদের প্রতিও কি তোমার করুণা হল না! 

২৭) কোন যুবকের মৃত্যুতে বলল: হে আল্লাহ এর ভরা যৌবনের প্রতি হলেও  করুণা করতে নিতেই যদি হতো, তবে অমুক বৃদ্ধ কিংবা অমুক বৃদ্ধাকে নিয়ে যেতে 

২৮)হে আল্লাহ: তোমার কাছে তার এমন কি প্রয়োজন পড়ে গেল যে, এ মুহুর্তেই (এত আগে ভাগেই) তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলে।

২৯)অকাল অসময়ে মৃত্যু

 

১. আল্লাহর সাথে হিল্লাও লাগে।

২. তোর মুখে ফুল চন্দন পড়ুক। ( ফুল চন্দন হিন্দুদের পুজা করার সামগ্রী)

৩. কস্ট করলে কেস্ট মেলে ( কেস্ট হিন্দু দেবির নাম, তাকে পাবার জণ্য কস্ট করছেন?)

৪. মহভারত কি অশুদ্ধ হয়ে গেল?( মহাভারত একটি উপন্যাস, যা সবসময় অশুদ্ধ)

৫। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত। ( এটি ইসলামের নামে কটূক্তি করা)

৬। লক্ষী ছেলে, লক্ষী মেয়ে, লক্ষী স্ত্রী বলা। ( হিন্দুদের দেব-দেবির নাম লক্ষী তাই ইসলামে এটি হারাম)

৭। কোন ঔষধকে জীবন রক্ষকারী বলা। ( জন্ম- মৃত্য একমাত্র আল্লাহর হাতে)

৮। দুনিয়াতে কাউকে শাহেনসা বলা। ( এর অর্থ রাজাদের রাজাধীরাজ)

৯। নির্মল চরিত্র বোঝাতে ধোয়া তুলশি পাতা বলা। ( এটি অনইসলামিক পরিভাষা যা হারাম)

১০। ইয়া খাজাবাবা, ইয়া গাঊস, ইয়া কুতুব ইত্যাদি বলা।( এটি শির্ক, ইসলামের সবচেয়ে বড় পাপ)

১১। ইয়া আলি, ইয়া রাসুল (সাঃ) বলে ডাকা এবং সাহায্য প্রার্থনা করা (আল্লাহ ছাড়া পৃথীবির কাউকে ডাকা শির্ক)

১২। বিসমিল্লায় গলদ বলা। ( এটি সরাসরি কুফরি)

১৩। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়া বলা। ( কুফরি বাক্য, সাবধান। )

১৪। মধ্যযুগি বর্বরতা বলা। ( মধ্যযুগ ইসলামের সর্ণযুগ)

১৫। মন ঠিক থাকলে পর্দা লাগে না। ( ইসলাম ধংসকারী মতবাদ)

১৬। নামাজ না পড়লে ঈমান ঠিক আছে বলা।

১৭| ইসলান নিয়ে ফাইজলামি,রসিকতা,ঠাটটা-মজা,বিদ্রুপ,উস্কানিমূলক কথা বলা,অপছন্দ করলে,না মানলে সে কাফের 






Comments

Popular posts from this blog

আসমাউল হুসনা

গুনা

আকিদা